ডিজিটাল আধুনিকায়নের বড় পদক্ষেপ হিসেবে ভারত সরকার বিদেশি ভ্রমণকারীদের জন্য প্রচলিত কাগজভিত্তিক আগমন (ডিসেমবার্কেশন) কার্ড বাতিল করে সম্পূর্ণ অনলাইন ডিজিটাল আগমন কার্ড চালু করছে।
১ অক্টোবর ২০২৫ থেকে ভারতে প্রবেশকারী প্রত্যেক বিদেশি নাগরিককে ভ্রমণের আগে বা ভ্রমণকালে ডিজিটালি তাদের আগমনের তথ্য জমা দিতে হবে। এর ফলে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া হবে আরও দ্রুত ও কার্যকর।

এই পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল সীমান্ত ব্যবস্থাপনার সঙ্গে ভারতের সমন্বয় ঘটাবে এবং ইমিগ্রেশন কাউন্টারে দীর্ঘ সারির ঝামেলা কমাবে। এই লেখায় আমরা ব্যাখ্যা করব—ডিজিটাল আগমন কার্ড কী, এটি কীভাবে কাজ করবে, কারা জমা দিতে বাধ্য, কোন তথ্য প্রয়োজন হবে, বাস্তবায়ন পরিকল্পনা, সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ এবং ভ্রমণকারীদের জন্য কিছু টিপস।

ডিজিটাল আগমন কার্ড কী (বিদেশিদের জন্য)?

  • ডিজিটাল আগমন কার্ড (যাকে “ইলেকট্রনিক ডিসেমবার্কেশন কার্ড” বা “ডিজিটাল আগমন ফর্ম”ও বলা হয়) একটি অনলাইন ফর্ম, যা বিদেশি ভ্রমণকারীরা ভারতে প্রবেশের সময় ইলেকট্রনিকভাবে জমা দেবেন।

  • ১ অক্টোবর ২০২৫-এর পর থেকে কাগজভিত্তিক কার্ড সম্পূর্ণভাবে বাতিল হবে। তবে একটি সংক্রমণকালীন সময় থাকবে (সর্বোচ্চ ছয় মাস), যখন পর্যন্ত কাগজের কার্ড গ্রহণ করা হবে, যতক্ষণ না ডিজিটাল সিস্টেম পুরোপুরি স্থিতিশীল হয়।

  • ডিজিটাল কার্ডের উদ্দেশ্য হচ্ছে কাগজভিত্তিক ফর্মে যেসব তথ্য আগে নেওয়া হতো, যেমন—পাসপোর্ট ও ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্য, সফরের উদ্দেশ্য, আগমনের বিবরণ, ভারতে অবস্থানরত ঠিকানা, কাস্টমস ডিক্লারেশন—এসব তথ্য এখন ডিজিটাল মাধ্যমে সংগ্রহ করা।

  • এই উদ্যোগ ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াকে দ্রুত করবে, দীর্ঘ সারি কমাবে এবং ভ্রমণকারী ও কর্তৃপক্ষ উভয়ের জন্য কাগজপত্রের ঝামেলা হ্রাস করবে।

 কারা ডিজিটাল আগমন কার্ড জমা দিতে বাধ্য?

  • এই নিয়ম কেবল বিদেশি নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য। ভারতীয় নাগরিকদের প্রবেশের জন্য কোনো আগমন কার্ড (কাগজ বা ডিজিটাল) পূরণ করার দরকার নেই।

  • পর্যটন ভিসা, ব্যবসা ভিসা, ছাত্র ভিসা বা অন্য যেকোনো বৈধ ভিসায় আসা বিদেশিদের এই ফর্ম জমা দিতে হবে।

  • OCI (Overseas Citizen of India) কার্ডধারী বা PIO (Person of Indian Origin) এর ক্ষেত্রেও নীতিমালা অনুযায়ী এটি প্রযোজ্য হতে পারে।

  • সংক্রমণকালীন সময়ে (১ অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত) কাগজভিত্তিক ফর্মও গ্রহণ করা হবে।

কী কী তথ্য সংগ্রহ করা হবে?

ডিজিটাল আগমন কার্ডে নিচের তথ্য চাওয়া হতে পারে:

  1. ব্যক্তিগত তথ্য (নাম, জন্মতারিখ, জাতীয়তা, লিঙ্গ ইত্যাদি)

  2. পাসপোর্ট ও ভ্রমণ ডকুমেন্টের তথ্য

  3. ভ্রমণ পরিকল্পনা (ফ্লাইট নম্বর, আগমনের তারিখ, প্রবেশের পোর্ট ইত্যাদি)

  4. সফরের উদ্দেশ্য (পর্যটন, ব্যবসা, শিক্ষা ইত্যাদি)

  5. ভারতে অবস্থানরত ঠিকানা

  6. কাস্টমস সংক্রান্ত ঘোষণা

  7. স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশ্ন (যদি প্রযোজ্য হয়)

  8. অন্যান্য সহায়ক তথ্য

ভ্রমণকারীরা এই তথ্য ওয়েব পোর্টাল বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে জমা দিতে পারবেন।

কবে ও কীভাবে জমা দিতে হবে?

  • ভ্রমণের আগে: যাত্রার পূর্বেই ফর্ম পূরণ করতে উৎসাহিত (বা বাধ্য) করা হবে।

  • সময়সীমা: সরকার হয়তো একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করবে (যেমন, আগমনের ২৪–৭২ ঘণ্টা আগে)।

  • পোর্টাল/অ্যাপ: একটি অফিসিয়াল ওয়েব পোর্টাল বা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে।

  • QR কোড/স্লিপ: ফর্ম জমা দেওয়ার পর ভ্রমণকারী একটি QR কোড বা কনফার্মেশন স্লিপ পাবেন, যা ইমিগ্রেশন কাউন্টারে দেখাতে হবে।

  • সংক্রমণকালীন সময়ে বিকল্প ব্যবস্থা: প্রাথমিক মাসগুলোতে যদি কেউ অনলাইনে ফর্ম পূরণ না করে থাকে, তবে কিছু fallback ব্যবস্থা থাকতে পারে।

  • ইমিগ্রেশন প্রসেসিং: কর্তৃপক্ষ ডিজিটাল ডেটা ব্যবহার করে দ্রুত যাচাই করবে, ফলে হাতে লেখা ফর্ম চেকের ঝামেলা কমবে।

বাস্তবায়ন টাইমলাইন ও পরিবর্তনকাল

  • কার্যকর হওয়ার তারিখ: ১ অক্টোবর ২০২৫

  • সংক্রমণকালীন সময়: সর্বোচ্চ ছয় মাস (অথবা সিস্টেম স্থিতিশীল হওয়া পর্যন্ত) কাগজভিত্তিক ফর্মও গ্রহণ করা হবে।

  • পরীক্ষামূলক প্রয়োগ: প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ট্রায়াল চালানো হবে।

  • সচেতনতা প্রচারণা: এয়ারলাইন্স, ট্রাভেল এজেন্সি ও বিদেশি দূতাবাসগুলোকে অবহিত করা হবে।

  • ইন্টিগ্রেশন: নতুন আইন Immigration and Foreigners Act, 2025 অনুযায়ী ডিজিটাল আগমন কার্ডকে বায়োমেট্রিক ও ইমিগ্রেশন ডেটাবেসের সঙ্গে যুক্ত করা হবে।

সুবিধা ও উপকারিতা

ভ্রমণকারীদের জন্য:

  • দ্রুত ইমিগ্রেশন প্রসেসিং

  • কম কাগজপত্র

  • ঘরে বসেই ফর্ম পূরণের সুবিধা

  • কম ভুল হওয়ার সম্ভাবনা

  • প্রসেসিং টাইম পূর্বানুমান করা সহজ

কর্তৃপক্ষ/সরকারের জন্য:

  • উন্নত ডেটা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ

  • নিরাপত্তা ও স্ক্রিনিং আরও শক্তিশালী

  • কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি

  • সহজ ইন্টিগ্রেশন ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন

  • বৈশ্বিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য

ভ্রমণকারীদের জন্য টিপস (১ অক্টোবর ২০২৫ এর পর)

  1. ভ্রমণের আগে সরকারি ওয়েবসাইটে আপডেট দেখুন।

  2. সময়মতো (২৪–৭২ ঘণ্টা আগে) ফর্ম জমা দিন।

  3. কনফার্মেশন QR কোড বা স্লিপ সঙ্গে রাখুন।

  4. পাসপোর্ট, ভিসা, তারিখ ও ঠিকানা সঠিকভাবে পূরণ করুন।

  5. প্রয়োজনে কাগজভিত্তিক ফর্ম পূরণের জন্য প্রস্তুত থাকুন (প্রাথমিক পর্যায়ে)।

  6. শুধু সরকারি ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ব্যবহার করুন।

  7. সহায়ক ডকুমেন্ট (পাসপোর্ট, ভিসা, হোটেল বুকিং ইত্যাদি) সঙ্গে রাখুন।

  8. এয়ারলাইন্স ও ট্রাভেল এজেন্টের নির্দেশনা মেনে চলুন।

আমাদের সেবা সমূহঃ
=============
💼 কর্পোরেট ট্যুর 👥 গ্রুপ ট্যুর
👪 ফ্যামিলি ট্যুর 🏢 কাষ্টমাইজ ট্যুর
⌛ ডে আউট ট্যুর 🚌 বাস টিকেট
🚢 শীপ টিকেট ✈️ এয়ার টিকেট
📁 ভিসা প্রসেসিং ( ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই সহ আরো অনেক) 🚂 ভারতীয় অভ্যন্তরীন রেল টিকেট
🏨 হোটেল বা রিসোর্ট বুকিং 🧳 ট্রাভেল গিয়ার সহ ভ্রমনের সকল সমাধান।
☕ আমাদের অফিসের ঠিকানাঃ
স্যুট – ২০৪, ৬৪-৬৮, ইস্টার্ণ কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স, কমালাপুর, মতিঝিল-১২১৭