Covid-19 মহামারির কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের ট্রেন যোগাযোগ প্রায় ২ বছর বন্ধ ছিলো । কিন্তু ২৯ মে ২০২২ সালে থেকে তা খুলে দেয়া হয়। পরিস্থিতি ক্রমশ শিথিল হওয়ায় সকল রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা ভারত এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পুনরায় চালু করে দেয়া হয়েছে । বাংলাদেশ থেকে ভারত মূলত তিনটি ট্রেন যায়। এই ট্রেনগুলো হল মিতালী, মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস। এই তিনটি ট্রেন সম্পর্কে বিস্তারিত আমরা এই ব্লগ  থেকে জানবো:

১. মিতালী এক্সপ্রেস:

মিতালী এক্সপ্রেসের উদ্বোধন হয় ২৬শে মার্চ ২০২১ সালে স্বাধীনতা দিবস বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবর রহমান এর সুবর্ণ জয়ন্তী ও জন্মশত বার্ষিকীতে। মিতালী এক্সপ্রেস উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাথে ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মদি। এটির রেল লাইনের দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৫৪ কিলোমিটার, যার ৪৪৬ কিলোমিটার বাংলাদেশে এবং ৮৪ কিলোমিটার অবস্থিত ভারতে।
এই ট্রেনটি মূলত বাংলাদেশের চীলাহাটি, নীলফামারি হয়ে, ভারতীয় সীমানার হলদিবাড়ি হয়ে ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন পৌঁছায়।

মিতালী এক্সপ্রেসের সময়সূচী:

ঢাকা থেকে প্রতি সোম ও বৃ্হস্পতিবার মিতালী এক্সপ্রেস ছাড়া হয়।
ঢাকা থেকে মিতালী ছাড়ার সময় রাত ৯টা ৫০ মিনিটে এবং ট্রেনটির ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি পৌছায় আনুমানিক সকাল ৭:০৫ মিনিটে। অর্থাৎ ৯ ঘন্টার কিছু বেশি সময় প্রয়োজন।
এবং ভারত থেকে প্রতি রবিবার ও বৃহস্পতিবার ছাড়া হয়।
মিতালী এক্সপ্রেস ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দুপুর ১২টা:১০ মিনিটে ছাড়া হয় এবং এটি ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট পৌছায়,রাত ১০টা :৩০ এর দিকে।

মিতালী এক্সপ্রেসের টিকেট মূল্য:

এসি চেয়ারের মূল্য- ২৭৮০/-
এসি সিটের মূল্য- ৩৪২০/-
এসি বার্থ- ৫২৫৫/-

২. মৈত্রী এক্সপ্রেস:

ঢাকা কলকাতা রুটের এই ট্রেনটি চালু হয় ২০০৮ সালের ১৪ই এপ্রিলের দিকে ।

মৈত্রী এক্সপ্রেসের সময়সূচী:

মৈত্রী সপ্তাহে চার দিন ঢাকা থেকে কলকাতা যায়। এই ট্রেনটি যেই দিনগুলো ঢাকা থেকে কলকাতায় যায়, সেদিনগুলো হল যথাক্রমে, বুধবার, শুক্রবার, শনিবার ও রবিবার।
ঢাকার ক্যান্টনম্যান্ট থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেস ছাড়া হয় সকাল ৮ টায় এবং ট্রেনটি কলকাতার চিতপুর স্টেশন পৌঁছায় বিকেল ৪ টায়।
অপরদিকে ট্রেনটি কলকতার চিতপুর স্টেশন থেকেও সপ্তাহে ৪ দিন ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়া হয়। তবে এবার সেটি সোমবার, মঙ্গলবার,শুক্রবার ও শনিবার ছাড়া হয়।
কলকাতার চিতপুর স্টেশন থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেস আনুমানিক সকাল ৭টা ১০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়া হয় এবং ট্রেনটি ঢাকায় বিকেল ৪টা ৫মিনিট নাগাদ পৌঁছে যায়।
এই রেলপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৩৮ কিলোমিটারের এই রেলপথটি দর্শনা ও গেদে হয়ে কলকাতায় যায়।

মৈত্রী এক্সপ্রেসের টিকিট মূল্য:

এসি চেয়ারের মূল্য- ২৫৭০/-
এসি সিটের মূল্য- ৩৬০৫/-
এছাড়া শিশুদের জন্য ডিস্কাউন্টের ব্যবস্থা আছে। ১-৫ বছরের শিশুদের জন্য ৫০% ডিস্কাউন্ট দেয়া হয়।

মৈত্রী এক্সপ্রেসের লাগেজের ওজনের খরচ:

একজন পূর্ণ বয়স্ক সর্বোচ্চ ৩৫ কেজি ওজনের লাগেজ নিতে পারবে তবে তার সাথে যদি শিশু থাকে তবেই তাকে ছাড় দেয়া হবে ৩৫কেজির জন্য। সাধারণ ক্ষেত্রে ২০ কেজি ওজনের লাগেজের জন্য ছাড় দেয়া হয় একজন পূর্ণবয়স্কর জন্য। ৩৫-৫০ কেজির জন্য ২ ডলার প্রতি কেজি হারে খরচ দিতে হয়। এবং ৫০ কেজির বেশি হলে এই খরচ হবে ১০ ডলার হারে হয়।

৩. বন্ধন এক্সপ্রেস

বন্ধন এক্সপ্রেস চালু হয় ২০১৭ সালের ১৬ই নভেম্বর । এটি মূলত বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বের প্রতীক।

বন্ধন এক্সপ্রেসের সময়সূচী:

বন্ধন এক্সপ্রেসের রুট হলো খুলনা থেকে কলকাতা এবং এটি সপ্তাহে দুইদিন (রবিবার ও বৃহস্পতিবার) খুলনা থেকে কলকতার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে থাকে।
খুলনা থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে বন্ধন ছাড়া হয় দুপুর ১:৩০ মিনিটে এবং ট্রেনটি কলকাতার সন্ধ্যা ৬ টা ১০ মিনিটে।
ট্রেনটি খুলনা থেকে যশোর-ঝিকরগাছা-বেনাপোল-পেট্রাপোল-বনগাঁ ও দমদম হয়ে কলকাতা পৌঁছায়।

বন্ধন এক্সপ্রেসের টিকিট মূল্য:
এসি চেয়ারের মূল্য- ১৫৩৫/-
এসি সিটের মূল্য- ২০৫৫/-

টিকিট ফেরত বা রিফান্ড ব্যবস্থা:
কিছু নির্দিষ্ট শর্তে টিকিট ফেরত দেয়া বা রিফান্ড করার সুযোগ করার রেখেছে রেলওয়ে কতৃপক্ষ। ১২০ ঘণ্টা আগে ফেরত দিলে বা রিফান্ড করলে ২৫% সার্ভিস চার্জ কাটা হয় ১২০ ঘণ্টার কম এবং ৯৬ ঘণ্টার বেশি হলে সার্ভিস চার্জ বাবদ ৫০% কাটা হয়। ৯৬ ঘণ্টার কম এবং ৭২ ঘণ্টার বেশি হলে টিকিটের ৭৫% কর্তনযোগ্য হবে। অন্যান্য ক্ষেত্রে কোন রিফান্ড দেয়া হয় না।